বাংলা ব্যাকরণ | সমোচ্চারিত শব্দ
কিছু সমোচ্চারিত শব্দ ও তাদের অর্থ উল্লেখসহ বাক্য রচনা
এখানে কিছু সমোচ্চারিত শব্দ ও তাদের অর্থ উল্লেখসহ বাক্য রচনা করে দেখানো হলো-
অন্য (অপর) :তাকে অন্য দিন আসতে বলেছি
অন্ন (ভাত) আমরা অন্ন ছাড়া জীবন ধারণ করতে পারি না।
অশ্ব (ঘোড়া) :অশ্ব একটি দ্রুতগামী প্রাণী।
অশ্ব (পাথর) :অশ্ম নিক্ষেপে সর্পটির মস্তক চূর্ণ হইল।
অনু (পশ্চাৎ) :মিথ্যাবাদীর অনুগমন করা উচিত নয়।
অণু (ক্ষুদ্রতম) :এ বিশাল পৃথিবী অণুপরমাণুর সৃষ্টি।
অপচয় (নষ্ট) :কোনো কিছুই অপচয় করা ভালো নয়।
অবচয় (সংগ্রহ) :এ অংশটি কবি সুফিয়া কামালের কবিতা থেকে অবচয়িত হয়েছে।
অবদান (কীর্তি) :রেডিও আবিষ্কারে বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্রের অবদান রয়েছে।
অবধান (মনোযোগ):গুরুজনের উপদেশ অবধান সহকারে শোনা উচিত।
অবিরাম (অনবরত):দুদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি।
অভিরাম (সুন্দর) :বাংলাদেশের মতো এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য আর কোথাও দেখিনি।
অনিষ্ট (ক্ষতি) :পরের অনিষ্ট করতে গেলে নিজের অনিষ্ট হয়।
অনিষ্ঠ (নিষ্ঠাহীন) :অনিষ্ঠ ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারে না।
আপন (নিজ) : সবারই আপন কাজে মন দেওয়া উচিত।
আপণ (দোকান) :শহরে বহর আলির একটি আপণ আছে।
আবাস (বাসস্থান) :লোকটির আবাস অনেক দূরে।
আভাস (ইঙ্গিত) :খেলা দেখার জন্য স্কুল বন্ধ থাকতে পারে বলে রফিক স্যার আভাস দিয়েছেন।
আসার (জলকণা) :আষাঢ়ে মেঘ থেকে আসার নামে।
আষাঢ় (মাস বিশেষ):আষাঢ়শ্রাবণ বর্ষাকাল।
আশা (আকাঙ্ক্ষা) : বেশি আশা করেই ভুল করেছি।
আসা (আগমন) : বাবার আজ স্কুলে আসার কথা।
আবরণ (আচ্ছাদন) :এ আবরণের ভেতরে রহস্য আছে।
আভরণ (অলংকার):মেয়েরা আভরণ পছন্দ করে।
উপাদান (উপকরণ) :বাবা আচারের সব উপাদান এনেছেন।
উপাধান (বালিশ) :উপাধান ছাড়া শোয়া যায় না।
উদ্যত (প্রস্তুত) : লোকটি চলে যেতে উদ্যত হয়েছিল।
উদ্ধত (অবিনীত) :কখনোই উদ্ধত আচরণ করতে নেই।
কমল (পদ্মফুল) :আমাদের দিঘিতে রক্তকমল ফুটেছে।
কোমল (নরম) :শিশুটির হাতখানা খুবই কোমল।
কুল (বংশ) :তিনি উচ্চ কুলে জন্মেছিলেন।
কুল (বরই) :এ গাছের কুল খেতে মজা।
সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ
অর্থ এবং বানানে ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো শব্দের উচ্চারণ প্রায় একই রকম। এ ধরনের শব্দকে সমোচ্চারিত শব্দ বা প্রায় সমোচ্চারিত শব্দ বলে। যেমন- ‘অন্ন’ এবং ‘অন্য’ শব্দদুটির উচ্চারণ প্রায় একই রকম হলেও এদের বানান এবং অর্থে পার্থক্য আছে। ‘অন্য’ শব্দের অর্থ অপর এবং ‘অন্ন’ শব্দের অর্থ ভাত।
কিছু উদাহরণ-
শর তীর/তৃণবিশেষ ধুম প্রাচুর্য, জাঁকজমক
ষড় ছয় (৬) ধূম ধোঁয়া
সর দুধের মালাই সুত পুত্র
স্বর শব্দ, সুর সূত সারথি, জাত
আবরণ আচ্ছাদন শিকার মৃগয়া
আভরণ গহনা, অলংকার, ভূষণ স্বীকার মেনে নেওয়া, বরণ
অন্ন ভাত পড়-পড় পড়ন্ত
অন্য অপর পর পর একের পর এক
আসা আগমন বাণী কথা, উক্তি
আশা প্রত্যাশা, ভরসা বানি গয়না তৈরির মজুরি
বেশি অনেক নিচ নিম্ন স্থান, বাড়ির নিম্নতল
বেশী বেশধারী (ছদ্মবেশী) নীচ হীন, নিকৃষ্ট
শব মৃতদেহ সকল সব, সমস্ত
সব সমস্ত শকল মাছের আঁশ
কাঁচা অপক্ব কাঁটা কণ্টক
কাচা ধৈৗত করা কাটা কর্তন
গাঁথা গেঁথে দেয়া গাঁ গ্রাম
গাথা কাহিনী, কাহিনীকাব্য গা শরীর
ঘাঁটি দাঁড়ি পূর্ণচ্ছেদ
ঘাটি দাড়ি মাঝি
বাঁক নদী বা পথের বাঁক বাঁধা বন্ধন
বাক কথা বাধা প্রতিহত করা, রোধ করা
কাঁদা ক্রন্দন গোঁড়া অন্ধ বা উগ্রভাবে সমর্থনকারী
কাদা কর্দম গোড়া নিচের অংশ
বাঁ বাম রোধ প্রতিরোধ, বাধা দেয়া
বা অথবা, কিংবা রোদ রৌদ্র
বরশা কূল তীর, উপকূল
বরষা বর্ষা, বৃষ্টি কুল বরই/জাত
ক্ষুরধার প্রচণ্ড ধারালো
ক্ষুরধারা ক্ষুরের মত ধারালো যে প্রবাহ বা স্রোত
সাড়া শব্দ বা ডাকের জবাব, প্রতিক্রিয়া শোনা শ্রবণ
সারা সমগ্র, শেষ, আকুল সোনা স্বর্ণ
দেড়ী দেড়গুণ জোড় যুগল
দেরি বিলম্ব জোর বল, শক্তি, সামর্থ্য
পাড়ি পারাপার
পারি সমর্থ বা সক্ষম হই
সমোচ্চারিত শব্দের প্রকরণ
১. সমধ্বনি: ণন, শ—ষ—স, উ—ঊ ইত্যাদি দ্বারা শব্দ গঠিত হতে পারে। যেমন: শোনা— সোনা।
২. সমরূপ : যার বানান ও উচ্চারণ এক কিন্তু অর্থ ভিন্ন। যেমন: চাল—চাল, উত্তর—উত্তর, মাথায়—মাথায়।
সমোচ্চারিত শব্দের প্রয়োজনীয়তা
সমোচ্চারিত শব্দ বিভিন্নভাবে বাক্যকে সাহায্য করে থাকে। সমোচ্চারিত শব্দ সঠিক বাক্য ও বাক্যের সঠিক অর্থ রক্ষা করা ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা রক্ষা করে। দেশীয় ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে, বক্তৃতার বক্তব্য আকর্ষণীয় করতে, বাক্যকে অলংকারমণ্ডিত করতে, অর্থের বিপর্যয় থেকে বাক্যকে রক্ষা করতে, বাক্যের ভাব— অর্থ রক্ষা করতে, ভুল বানান থেকে রক্ষা করে এবং বাক্যে যমক অলংকার ব্যবহার করতে সাহায্য করে।
কতিপয় শব্দের নমুনা
সমোচ্চারিত শব্দ অর্থ বাক্যরচনা
১
অন্ন (ভাত) — দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতিতে মানুষের মুখে অন্ন ওঠা দায়।
অন্য (অপর) — সংস্কার, সংস্কার বাদ দিয়ে দুটো অন্য কথা বল।
২
অনু (পশ্চাৎ) — এই দেশে এক সময় স্ত্রীলোকদের মৃত স্বামীর চিতায় অনুগমন করতে হতো।
অণু (ক্ষুদ্রতম অংশ) — এটুকু ভাতে আমার পেটের অণুটুকুও ভরবে না।
৩
অনিষ্ট (ক্ষতি) — অন্যের অনিষ্টের চিন্তা কখনো মনে এনো না।
অনিষ্ঠ (নিষ্ঠাহীন) — লেখা পড়ায় অনিষ্ঠ হলে পাশ করতে পারবে না।
৪
অংশ (ভাগ) — বাপের জমির অংশ মেয়েরাও ছাড়বে না।
অংস (কাঁধ) — বিপদে দূরে সরে না থেকে অংস মেলাও।
৫
অর্ঘ (মূল্য) — তোমার একাজের অর্ঘ দেওয়ার সাধ্য আমার নাই।
অর্ঘ্য (পূজার উপকরণ) — মানুষের জন্য কাজ করলে তারা তোমার পায়ের কাছে অর্ঘ্য সাজাবে।
৬
অশ্ব (ঘোড়া) — শুয়ে পড়ো, অশ্বের মতো দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ো না।
অশ্ম (পাথর) — অশ্মে মাথা ঠুকে লাভ নাই, চল বাড়ি যাই।
৭
অশক্ত (দুর্বল) — বিপদে অশক্ত হতে নাই।
অসক্ত (আসক্তিহীন) — বইয়ে অসক্ত হলে ছাত্রজীবন বৃথা হবে।
৮
অনিল (বাতাস) — গুমোট গরমে অনিল এসে প্রাণ জুড়াল।
অনীল (যা নীল নয়) — আকাশ কী কখনো অনীল হয়।
৯
অভ্যাস (বারবার চেষ্টা)— পরীক্ষা কাছে রাত জেগে পড়ার অভ্যাস করো।
অভ্যাশ (নিকট) — অংক অভ্যাস কর, পরীক্ষা অভ্যাশে।
১০
অবধ্য (বধের অযোগ্য) — মানুষ মানুষের অবধ্য।
অবোধ্য (যা বোঝা যায় না) — অবোধ্য তত্ত্ব কথা সব জায়গায় বল না।
১১
অপরিণত (যা পরিণত হয়নি) — অপরিণত বয়সে এ বই পড়ে কিছুই বুঝবে না।
অপরিণীত (অবিবাহিত) — বিধবার ঘরে অপরিণীত দুটো মেয়ে আছে।
১২
অন্ত (শেষ) — সংসারে কাজের অন্ত নাই।
অন্ত্য (যা অন্তে আছে) — অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া শেষেই মানুষের শোক নিঃশেষ হয়ে যায়।
১৩
অন্যন্য (অপরাপর) — অন্যন্যের সঙ্গেই তার ভাল সম্পর্ক আছে।
অন্যোন্য (পরস্পর) — অন্যোন্যের প্রতি ভালোবাসায় মানুষের সুখ।
১৪
অন্নপুষ্ট (ভোজনপুষ্ট) — এ আকালে অন্নপুষ্ট মানুষ নাই।
অন্যপুষ্ট (কোকিল) — কাকের বাসায় কোকিলের ছা অন্যপুষ্ট হয়।
১৫
অবদান (সৎকর্ম) — মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য।
অবধান (মনোযোগ) — স্বাধীনদেশের মান বাড়াতে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তিতে অবদান দিতে হবে।
১৬
অবিরাম (অনবরত) — অবিরাম চেষ্টা মানুষকে সফলতা এনে দেয়।
অভিরাম (সুন্দর) — পোশাকে নয়নাভিরাম সেজো না, মনের দিকে অভিরাম হও।
১৭
অপচয় (ক্ষতি) — সময়ের অপচয় করলে জীবন নষ্ট হয়।
অবচয় (চয়ন) — সবকিছুতেই সৌন্দর্য অবচয়ন করতে হবে।
১৮
অবিনীত (উদ্ধত) — অবিনীত সন্তান মা—বাবার মর্যাদা নষ্ট করে।
অভিনীত (অভিনয় করা হয়েছে)— অনেক সময় নাট্যদলের অভিনীত মঞ্চনাটক দর্শকের মনে আশা জাগায়।
১৯
অজগর (সাপ) — অজগর অলস প্রকৃতির।
অজাগর (নিদ্রা) — মা অজাগর ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে আছে।
২০
অপগত (দূরীভূত) — অপরের দুঃখ অপগত করতে জীবন বিলিয়ে দাও।
অবগত (জানা) — দেশসেবা করতে চাইলে দেশ সম্পর্কে অবগত হওয়া চাই।
২১
আদি (মূল) — চর্যাপদ বিাংলার আদি ভাষা।
আধি (মনঃকষ্ট) — আধি গোপন না করে খোলা মেলা আলোচনা করা ভালো।
২২
আশা (ভরসা) — ছাত্রদের উপর দেশের মানুষের অনেক আশা।
আসা (আগমন) — আজ তার বাড়িতে আসা হবে না।
২৩
আবাস (বাসস্থান) — ঢাকা শহরে অনেক মানুষের আবাস নাই, তারা ফুটপথে থাকে।
আভাস (ইঙ্গিত) — পুলিশের আভাসেই চোরটা পালিয়ে গেল।
২৪
আবরণ (আচ্ছাদন) — ছাতার আবরণে রোদ— বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আভরণ (অলংকার) — আভরণের লোভ দেখিয়ে মেয়েদের ঘরে আটকিয়ে রাখা যাবে না।
২৫
আপন (নিজ) — আপন কাজে কেউ ফাঁকি দেয় না।
আপন (দোকান) — আপন থেকে লবণ কিনে আনো।
২৬
আষাঢ় (মাস বিশেষ) — বাংলাদেশে আষাঢ়ে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
আসার (প্রবল বৃষ্টিপাত)— আসার বন্যার অন্যতম কারণ।
২৭
উপাদান (উপকরণ) — আমাদের দেশে কৃষি উপাদান সহজলভ্য।
উপাধান (বালিশ) — উপাধানে মাথা রেখে ঘুমাও।
২৮
ওষধি (যে গাছ একবার ফল দিয়ে মারা যায়)— ধান ওষধি গাছ।
ওষধি (ভেষজ উদ্ভিদ) — ওষধির পর্যাপ্ত চাষ বাংলাদেশের জন্য জরুরি।
২৯
কূল (তট) — নদিকূলে বসে সূর্যাস্ত দেখতে ভালো লাগে।
কুল (বংশ) — উঁচুকুল জন্মালেই ভালো মানুষ হওয়া যায় না।
৩০
কাক (পাখি বিশেষ) — কাক কালো হয়।
কাঁখ (কোমর) — কাঁখে কলসি গ্রামীণ বধূর প্রাচীন ছবি।
৩১
কালি (লেখার রং) — কালো কালিতে ভালো লেখা হয়।
কালী (সনাতন ধর্মের দেবী) — কালী শক্তির প্রতীক।
৩২
ক্রীত (কেনা হয়েছে যা) — শ্রমিকেরা ক্রীতদাস নয়।
কৃত (করা হয়েছে যা) — প্রত্যেক মানুষ নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করে।
৩৩
কপাল (ললাট) —কপাল ভালোমন্দ বলে কিছু নাই কাজ করলে ফল লাভ করা যায়।
কপোল (গণ্ডদেশ) — জ্বর এলে কপোলে হাত দিয়ে তাপমাত্রা বোঝা যায়।
৩৪
খাট (পালঙ্ক) — খাটতো দূরের কথা আমাদের দেশে বহু মানুষের ঘরই নাই।
খাটো (বেঁটে) — আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ খাটো প্রকৃতির।
৩৫
খুর (পশুর পায়ের তলদেশ) — গরুর খুরের নিচে পা পড়লে মানুষের পা থেতলে যায়।
ক্ষুর (চুল দাড়ি কামাবার অস্ত্রবিশেষ)—এখন ক্ষুরের চেয়ে বে¬ড দিয়েই বেশি মানুষ শেভ করে।
৩৬
গা (শরীর) — কৃষকের গা রোদে পুড়ে তামাটে হয়।
গাঁ (গ্রাম) — গাঁয়ের মানুষ সহজসরল হয়।
৩৭
গাদা (রাশি, স্তুপ) — কৃষক ধান কেটে গাদা দিয়েরাখে।
গাধা (গর্ধভ) — গাধার সামনে মূলা ঝুলিয়ে ভারটানা সহজ।
৩৮
গোকুল (বৃন্দাবন) — কৃষ্ণ গোকুলে বাঁশি বাজায়।
গোকুল (গরুজাতি) — গোকুল আমাদের গৃহপালিত পশু।
৩৯
ঘোড়া (অশ্ব) — ঘোড়ার গায়ে শক্তি বেশি।
ঘোরা (বিচরণ) — রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
৪০
চাখড়ি (খড়িমাটি) — চাখড়ি দিয়ে কাপড়ে দাগকাটা যায়।
চাকরি (বেতনের বিনিময়ে কাজ)— চাকরিতে স্বাধীনতা নাই।
৪১
চাল (ঘরের চালা) — গ্রামেও এখন আর খড়ের চালের প্রচলন নাই।
চাল (চাউল) — চালের বাজারে এখন সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নাই।
৪২
চির (দীর্ঘকাল) — চিরদিন কেউ বেঁচে থাকে না।
চীর (ছেঁড়া কাপড়) — চীর হলেও পরিষ্কার করে পরতে হয়।
৪৩
ছার (অধম) — সে আবার কোন ছার, তাকে কুর্নিশ করতে হবে।
ছাড় (অনুমতি) — অশালীন সিনেমা প্রদর্শণীয় ছাড়পত্র বাতিল করতে হবে।
৪৪
ছাদ (আচ্ছাদন) — ছাদে উঠলেই চাঁদে যাওয়া যায় না।
ছাঁদ (আকৃতি, গঠন) — পৃথিবীতে নানা ছাঁদের মানুষ দেখা যায়।
৪৫
জল (পানি) — জলের কোন রং নেই।
জ্বল (দীপ্তি) — রাতে ঝোপে ঝোপে জোনাকির আলো জ্বলজ্বল করে।
৪৬
জাম (ফলবিশেষ) — পাকা জামের রস মধুর।
যাম (অংশ) — দিবসের দ্বিতীয় যামে তোমার সঙ্গে দেখা হবে।
৪৭
জিব (জিহ্বা) — কুকুরের জিব দিয়ে লালা পড়ে।
জীব (প্রাণী) — বুদ্ধির জোরেই জীব জগতে মানুষ শ্রেষ্ঠ।
৪৮
জ্যোতি (আলো) — চাঁদের নিজের কোন জ্যোতি নাই।
যতি (ছেদ) — কাজে যতি দেওয়া মানে কাজবন্ধ করা নয়।
৪৯
টিকা (রোগের প্রতিষেধক) — টিকা দিলে অনেক রোগের আক্রমন থেকেরক্ষা পাওয়া যায়।
টীকা (ব্যাখ্যা) — অবোধ্য লেখায় টীকা টিপ্পনি জুড়ে স্পস্ট করতে হয়।
৫০
টেকা (সয়ে থাকা) — দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গরিব মানুষের টেকা দায়।
টেক্কা (প্রতিযোগিতা) — হস্তশিল্প যন্ত্রশিল্পের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে টিকতে পারে না।
৫১
ঠক (ধ্বনিবিশেষ) — ঠকঠক শব্দ করে সে অন্ধকার রাস্তায় হেঁটে চলে।
ঠক (প্রতারক) — ঠক মানুষকে কেউ শ্রদ্ধা করে না।
৫২
ডোল (ভাণ্ড) — ডোলে ধান চাল রাখা হয়।
ঢোল (বাদ্যযন্ত্র) — ঢাক ঢোল বাজিয়ে আসর জমিয়ে নিলো।
৫৩
ডাল (শাখা) — ঝড়ের সময় গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে।
ডাল (খাদ্যবিশেষ) — গরিবের ডালভাত খেয়ে দিন কাটে।
৫৪
ঢাল (আঘাত প্রতিরোধ করার অস্ত্র)—ঢাল দিয়ে সে তীরের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করল।
ঢাল (ঢালু জমিবিশেষ) — পাহাড়ের ঢালে ঢালে জুম চাষ হয়।
৫৫
দিন (দিবস) — দিন যেয়ে রাত আসে।
দীন (দরিদ্র) — দীনে দয়া করা মানুষের ধর্ম।
৫৬
দেশ (ভূখণ্ড) — অনেক শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে।
দ্বেষ (হিংসা) — দ্বেষ মানুষকে ধবংস করে।
৫৭
দীপ (আলো) — মঙ্গলদীপ জ্বালিয়ে শুভ কামনা করা হয়।
দ্বীপ (জলবেষ্টিত স্থলভাগ) — ভোলা বাংলাদেশের বৃহত্তম বদ্বীপ।
৫৮
ধনী (বিত্তশালী) — ধনী মানুষের ধনের লোভ অপরিসীম।
ধ্বনি (আওয়াজ) —১৯৭১ সালে ‘জয়বাংলা’ ধ্বনি রাজাকারদের আতঙ্কিত করে তুলত।
৫৯
ধরা (পৃথিবী) — ধনে ধান্যে ভরা আমাদের এই ধরা।
ধড়া (কটি বস্ত্র) — ধড়া পরে তাকে অসহায় মনে হচ্ছে।
৬০
ধাতৃ (বিধাতা) — মানুষের মাঝেই ধাতৃ নিজেকে লুকিয়ে রাখেন।
ধাত্রী (দাই) — ধাত্রী মা শিশুটিকে লালনপালন করেন।
৬১
নীর (পানি) — বানের নীর মানুষের দুঃখের কারণ।
নীড় (পাখির বাসা) — কোকিল নীড় বানাতে পারে না।
৬২
নিতি (রোজ) — নিতি দিন তোমার কাছে আমার প্রার্থনা।
নীতি (নিয়ম) — দেশ পরিচালনার নীতিই রাজনীতি।
৬৩
নিত্য (প্রতিদিন) — সে নিত্য এখানে আসা যাওয়া করে।
নৃত্য (নাচ) — ছোট শিশুটির নৃত্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
৬৪
নিরাশ (আশাহীন) — নিরাশ মানুষকে সফল হতে দেয় না।
নিরাস (প্রত্যাখ্যান) — দুর্নীতিকে মানুষ নিরাস করেছে।
৬৫
নিরস্ত্র (অস্ত্রহীন)— ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি সৈন্য।
নিরস্ত (ক্ষান্ত) — শহিদ হয়েছে তবু যুদ্ধে বাঙালি নিরস্ত হয়নি।
৬৬
প্রদান (দেওয়া) — ভিয়েতনাম সরকার দুজন বাংলাদেশিকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি প্রদান করেছে।
প্রধান (বড়, শ্রেষ্ঠ) — ভাত বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য।
৬৭
পরা (পরিধান) — আদিম মানুষ কাপড় পরত না।
পড়া (পাঠ করা) — বই পড়া মজার কাজ।
৬৮
পান (পাতা বিশেষ) — পাহাড়ে পানের চাষ ভালো হয়।
পান (পান করা) — ধূমপান বদ অভ্যাস।
৬৯
প্রসাদ (অনুগ্রহ) — প্রসাদ নয়, গরিবকে তার প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।
প্রাসাদ (বড় দালান) — ঢাকা শহরে প্রাসাদের অভাব নাই।
৭০
পালক (পাখির ডানার অংশ) — পালক পাখিকে শীত ও তাপ থেকে রক্ষা করে।
পলক (মুহূর্ত, অল্প সময়) — পারমাণবিক বোমা এক পলকে আমাদের পৃথিবীকে ধবংস করে দিতে পারে।
৭১
পরভৃত (কোকিল) — বসন্তে পরভৃত ডাকে।
পরভৃৎ (কাক) — পরভৃৎ কাকা করে।
৭২
ফি (প্রত্যেক) — ফিবছর আমরা নববর্ষ উদযাপন করি।
ফি (বেতন) — ফি বৃদ্ধি করে শিক্ষাকে পণ্য বানানো হচ্ছে।
৭৩
বর্ষা (ঋতুবিশেষ) — বর্ষাকালে মাঠঘাট পানিতে ভরে যায়।
বর্শা (অস্ত্রবিশেষ) — বর্শার আঘাতে মানুষের মৃত্যু হয়।
৭৪
বান (বন্যা) — বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াও।
বাণ (শর) — বানবিদ্ধ হরিণ শাবক ছটফট করতে করতে মারা গেল।
৭৫
বল (শক্তি) — খাদ্য শরীরের বল বৃদ্ধি করে।
বল (খেলার বল) — চার বছর পরপর বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
৭৬
বিনা (ব্যতীত) — বিনা কারণে কার্য হয় না।
বীণা (বাদ্যযন্ত্র) — বীণার সুরে মানুষ আনন্দ পায়।
৭৭
বিষ (গরল) — আর্সেনিক এক প্রকার বিষ।
বিশ (কুড়ি) — বিশ টাকায় এখন এক কেজি আলুও কিনতে পাওয়া যায় না।
৭৮
ভাষণ (উক্তি, কথন, বক্তব্য) — মিথ্যা ভাষণে মানুষকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।
ভাসন (দীপ্তি) — সূর্যের আলয় সোনা ভাসন ছড়ায়।
৭৯
ভারা (স্তূপাকার) — ধান কাটা শেষে চাষিরা ভারা করে রাখে।
ভাড়া (মাশুল) — এখন বাসের ভাড়াও মানুষের অসহনীয়।
৮০
মন (অন্তর, হৃদয়) — মনই মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
মণ (চল্লিশ সের) — পরিমাপের জন্য এখন আর মণ ব্যবহার করা হয় না।
৮১
মাস (ত্রিশ দিন) — বারমাস সে এখানে থাকে।
মাষ (কলাই) — মাষকলাই ডাল খেতে ভালো।
৮২
মুখ (বদন) — পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
মুক (বোবা) — মুক মানুষ কথা বলতে পারে না।
৮৩
মরা (মৃত) — মরা মানুষ পানিতে ভেসে ওঠে।
মড়া (শবদেহ) — মড়াকে তাড়াতাড়ি সৎকার করাই ভালো।
৮৪
মূর্খ (জ্ঞানহীন) — মূর্খ মানুষের কান্ডজ্ঞান থাকে না।
মুখ্য (প্রধান) — মেধা নয়, টাকাই শিক্ষা গ্রহনের জন্য মুখ্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে এখন।
৮৫
মোড়ক (আচ্ছাদন) — বিজ্ঞাপনের মোড়কে পন্যের গুণ বোঝা যায় না।
মড়ক (মহামারি) — আগে মড়ক লেগে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত।
৮৬
যোগ্য (উপযুক্ত) — মন্ত্রীর ছেলে চোর যোগ্য বাপের যোগ্য পুত্র বটে।
যজ্ঞ (যাগ, উৎসব) — বিজয় দিবস বাঙালিদের মিলনযজ্ঞ।
৮৭
রচক (রচয়িতা) — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের রচক।
রোচক (উপভোগ্য) — মুখরোচক হলেই খাদ্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয় না।
৮৮
রাধা (রাধিকা) — রাধা কৃষ্ণের লীলা বৈষ্ণব মতে ভগবত লীলা।
রাঁধা (রন্ধন করা) — যে ভাতরাঁধে সে চুলও বাধে।
৮৯
লক্ষ (সংখ্যা বিশেষ) — লক্ষ লক্ষ মানুষ মাঠে নেমেছে।
লক্ষ্য (দৃষ্টি, উদ্দেশ্য, গন্তব্যস্থল) — স্বাধীনতা পরবর্তী সংবিধানই আমাদের লক্ষ।
৯০
লব্ধ (লাভ করা) — জ্ঞানলব্ধ মানুষ পথ চিনতে ভুল করে না।
লুব্ধ (আকৃষ্ট) — মানুষের পোশাক দেখে অনেকেই লুব্ধ হয়।
৯১
লক্ষণ (চিহ্ন) — নিয়মিত লেখাপড়া করা ভালো ছাত্রের লক্ষণ।
লক্ষ্মণ (রামের ভাই) — রাম লক্ষ্মণ সহোদয়।
৯২
শক্ত (কঠিন) — কাদা মাটি নরম হলেও গুড়িয়ে ইট শক্ত হয়।
সক্ত (আসক্ত) — মাদকাসক্ত সন্তান মা— বাবার কষ্টের কারণ।
৯৩
শয্যা (বিছানা) — শয্যা বিছিয়ে সে ঘুমিয়ে গেলো।
সজ্জা (সাজ) — বর সজ্জায় তাকে বেশ মানিয়েছে।
৯৪
শীত (শীতল) — উত্তরবঙ্গে শীত বেশি পড়ে।
সিত (সাদা) — সিত কাগজে ইচ্ছামত লেখা হয় না।
৯৫
শব (মৃতদেহ) — সব ধর্মেই শব সৎকারের কথা আছে।
সব (সকল) — সব মানুষের মুখে ভাত যোগানোর দায়িত্ব সরকারের।
৯৬
শিকার (মৃগয়া) — শিকার করা অনেক মানুষের শখ।
স্বীকার (মেনে নেওয়া) — ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্য পরাজয় স্বীকার করে।
৯৭
সর্গ (অধ্যায়) — বইটি পাঠ সর্গে সাজানো।
স্বর্গ (বেহেশত) — মাতৃভূমি মানুষের কাছে স্বর্গের সমান।
৯৮
সহিত (সঙ্গে) — পণ্যের সহিত ফ্রি দেওয়া বিক্রয় কৌশল।
স্ব—হিত (নিজ কল্যাণ) — পাগলেও স্ব-হিত বোঝে।
৯৯
সাড়া (সংকেত) — বিড়ালের সাড়া পেয়ে ইঁদুরটি পালিয়ে গেল।
সারা (সমাপ্ত) — কাজ সারা হলেই ঘরে ফিরব।
১০০
সাক্ষর (শিক্ষিত, অবদান) — আমাদের দেশে সাক্ষর মানুষ কম।
/সাহিত্যে তিনি সাক্ষর রেখেছেন।
স্বাক্ষর (নামসই) — আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই স্বাক্ষর করতে জানে না।
১০১
হুতি (হোম) — পুরোহিত অগ্নিতে সৃতাহুতি দিয়ে মন্ত্র পাঠ শুরু করলেন।
হূতি (আহবান) — শ্রমিক অহূতিতে আগামিকাল ধর্মঘট।
১০২
হাড় (অস্তি) — হাড়ই সম্বল, তার শরীরে মাংস নাই বললেই চলে।
হার (পরাজয়) — প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কাউকে না কাউকে হার মানতেই হয়।
১০৩
হাঁস (হংস) — হাঁস পানিতে সাতাঁর কাটে।
হাস (হাসি) — হাসতে পারলে মন ভালো থাকে।